ইথিক্যাল হ্যাকিং বর্তমানে একটি উচ্চমানসম্পন্ন পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এর গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মার্কেটপ্লেস এনালাইসিস করলে দেখা যায়, একজন ইথিক্যাল হ্যাকার এর ইনকাম প্রতি ঘন্টায় সর্বনিম্ন $20 থেকে সর্বোচ্চ $999[Imamsab M., India] পর্যন্ত হতে পারে। এই তথ্য প্রথমে অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, তবে এটি সম্পূর্ণ সত্য। ইথিক্যাল হ্যাকাররা তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপন, সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের করা এবং সাইবার হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য নিয়োজিত থাকেন, যা কোম্পানির জন্য অমূল্য। এই কারণে, কোম্পানিগুলো ইথিক্যাল হ্যাকারদের জন্য বড় অংকের পারিশ্রমিক দিতে প্রস্তুত থাকে।
একজন ভালো ইথিক্যাল হ্যাকার হতে পারলে ইনকাম নিয়ে কোন টেনশন করার প্রয়োজন নেই। ভালো ইথিক্যাল হ্যাকাররা শুধুমাত্র উচ্চ পারিশ্রমিক পান না, তাদের কাজের স্বীকৃতি ও সম্মানও পান। দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, সার্টিফিকেশন এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করলে ইথিক্যাল হ্যাকিং ক্যারিয়ার হিসেবে একটি সোনালী ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারে। তাই যারা এই পেশায় আগ্রহী, তারা যদি যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তাহলে তাদের জন্য উজ্জ্বল ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে। ইথিক্যাল হ্যাকার বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে পারেন:
সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইবার সিকিউরিটি উন্নত করার জন্য কাজ করে। এখানে ইথিক্যাল হ্যাকাররা সাইবার সিকিউরিটি এনালিস্ট,পেনেট্রেশন টেস্টার, সিকিউরিটি কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করতে পারেন, যেখানে তারা সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা বিশ্লেষণ করে দুর্বলতা সনাক্ত করা, সিস্টেমের দুর্বলতা পরীক্ষা করার জন্য আক্রমণের প্রতিরূপ তৈরি করা, ক্লায়েন্টদের সিকিউরিটি ইমপ্রুভমেন্টের পরামর্শ প্রদান করা সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারেন ।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান:
ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ইথিক্যাল হ্যাকারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, এখানে তারা সিকিউরিটি অডিটর হিসেবে ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অডিট করা এবং দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং সিকিউরিটি ম্যানেজার হিসেবে ব্যাংকের নিরাপত্তা নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করা বিষয় নিয়ে কাজ করতে পারে।
সরকারি সংস্থা:
সরকারি সংস্থায় ইথিক্যাল হ্যাকাররা বিভিন্নভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেটর হিসেবে কাজ করে সাইবার অপরাধের তদন্ত করে এবং প্রমাণ সংগ্রহ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এছাড়া, সিকিউরিটি এজেন্ট হিসেবে ইথিক্যাল হ্যাকাররা সরকারি ডেটা এবং সিস্টেমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, যা সরকারের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের সংবেদনশীল তথ্য রক্ষা করে। তারা বিভিন্ন সাইবার আক্রমণ থেকে সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখতে নেটওয়ার্ক এবং সিস্টেমের দুর্বলতা সনাক্ত করে এবং সেই দুর্বলতাগুলোকে মেরামত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। এভাবে, সরকারি সংস্থার ইথিক্যাল হ্যাকাররা তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং দেশের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সাইবার সিকিউরিটি শিক্ষায় ইথিক্যাল হ্যাকারদের কাজে লাগায়,সাইবার সিকিউরিটি ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে ছাত্রদের সাইবার সিকিউরিটি এবং ইথিক্যাল হ্যাকিং শেখানো এবং রিসার্চার হিসেবে সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কিত নতুন প্রযুক্তি এবং পদ্ধতি গবেষণা করতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং:
ফ্রিল্যান্সিং করে একজন ইথিক্যাল হ্যাকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করতে পারে। তারা ইথিক্যাল হ্যাকিং কনসালট্যান্ট হিসেবে বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের সিকিউরিটি পরামর্শ প্রদান করতে পারে, যা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইবার সিকিউরিটি উন্নত করতে সহায়ক। এছাড়া, বাগ বাউন্টি প্রোগ্রাম পার্টিসিপেন্ট হিসেবে ইথিক্যাল হ্যাকাররা বিভিন্ন কোম্পানির বাগ বাউন্টি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে সিকিউরিটি ফ্ল্যাগুলি খুঁজে বের করতে পারে এবং এর বিনিময়ে পুরস্কার বা পারিশ্রমিক পেতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ থাকে, যেমন পেনেট্রেশন টেস্টিং, সিস্টেম অডিটিং, এবং সাইবার সিকিউরিটি ট্রেনিং প্রদান। এভাবে, ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে ইথিক্যাল হ্যাকাররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির সাইবার সিকিউরিটি উন্নত করতে এবং নিজস্ব দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করতে পারে।
বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন Upwork, Freelancer, Fiverr, Toptal, Guru, PeoplePerHour, HackerOne, Bugcrowd, FlexJobs, এবং SimplyHired এ একজন ইথিক্যাল হ্যাকার তার ক্যারিয়ার গড়তে পারে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে ইথিক্যাল হ্যাকাররা তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ পান। Upwork এবং Freelancer এর মত প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের আইটি এবং সিকিউরিটি সম্পর্কিত কাজ পাওয়া যায়, যেখানে Fiverr এবং PeoplePerHour এ ঘন্টাভিত্তিক বা প্রকল্পভিত্তিক সিকিউরিটি কনসালটেশন এবং পেনেট্রেশন টেস্টিং সেবা প্রদান করা যায়।
Toptal এবং Guru প্ল্যাটফর্মগুলো উচ্চ মানের ফ্রিল্যান্সারদের জন্য, যেখানে সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বেশি। HackerOne এবং Bugcrowd বিশেষত বাগ বাউন্টি প্রোগ্রামের জন্য উপযোগী, যেখানে ইথিক্যাল হ্যাকাররা বিভিন্ন কোম্পানির সিকিউরিটি দুর্বলতা খুঁজে বের করে পুরস্কৃত হতে পারেন। FlexJobs এবং SimplyHired বিভিন্ন রিমোট কাজের জন্য উপযোগী প্ল্যাটফর্ম, যা ইথিক্যাল হ্যাকারদের জন্যও সুযোগ করে দেয়। এই প্ল্যাটফর্মগুলো ইথিক্যাল হ্যাকারদের তাদের দক্ষতা প্রদর্শন এবং ক্যারিয়ার উন্নত করার জন্য একটি আদর্শ স্থান।
আমাদের Ethical hacking কোর্সগুলি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে আপনি শীর্ষস্থানীয় অনলাইন ট্রেনিং প্ল্যাটফর্ম যেমন Udemy, Coursera, Skillsoft, Pluralsight, এবং Skillshare-এ প্রশিক্ষণ প্রদানকারী অভিজ্ঞ শিক্ষকদের কাছ থেকে শিখতে পারেন। প্রতিটি কোর্সের কনটেন্ট এমনভাবে সাজানো হয়েছে যে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে সম্পূর্ণ দক্ষতা অর্জন করতে আপনি শুধুমাত্র সেই কোর্সের ওপর নির্ভর করতে পারেন এবং অন্য কোথাও থেকে শিখতে না হয়।
এই কোর্সগুলোতে করার মাধ্যমে আপনি Ethical hacking -এর উপর একটি পূর্ণাঙ্গ ও গভীর ধারণা পাবেন, যা আপনাকে একজন দক্ষ প্রোগ্রামার হতে সহায়তা করবে। Ethical hacking শেখার জন্য আর অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন হবে না–সবকিছুই আপনি এখান থেকে শিখতে পারবেন।